পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির উদ্যোগে, এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) দলের ৭৮তম প্রতিষ্ঠা দিবস ও সমাবেশ।
রিপোর্টার,সমরেশ রায় ও শম্পা দাস, কলকাতা ,পশ্চিমবঙ্গ:
আজ ২৪ শে এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ঠিক দুপুর তিনটায়, কলকাতা শহীদ মিনার ময়দানে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির উদ্যোগে, এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) দলের ৭৮ তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হলো। এবং এই উপলক্ষে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেন ও প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে একটি সুবিশাল সমাবেশ করেন,
প্রধান বক্তা ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ, সভাপতি তো করেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড মানববেরা, প্রদর্শনীর শুভ সূচনা করেন পলিটব্যুরোর প্রবীণ সদস্য গোপাল কুন্ডু, উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সম্পাদক মন্ডলী সদস্য তরুণ কান্তি নস্কর। উপস্থিত ছিলেন চন্ডীদাস ভট্টাচার্য সম্পাদক পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি, এছাড়াও অন্যান্যরা।
এস ইউ সি আই এর প্রাণ প্রতিষ্ঠাতা কমরেড শিবদাস ঘোষের স্মৃতির উদ্দেশ্যে, প্যারেড ও রেড স্যালুটের মধ্য দিয়ে সুন্দর Rally করে মঞ্চের সামনে উপস্থিত হন, এবং মঞ্চে গণসংগীত এর মধ্য দিয়ে ও শিবদাস ঘোষের প্রতি কৃতিতে মাল্যদান করে এই সমাবেশে শুভ সূচনা হয়। একে একে মঞ্চে কমরেড শিবদাস ঘোষের প্রতিকৃতিতে মালা দিয়ে সম্মান জানান।
এই সভার মূল উদ্দেশ্য হলো, ইন্দ্র রাজ্য সরকারের চূড়ান্ত জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা ও শ্রেণী সংগ্রাম গড়ে তুলতেই এই সমাবেশ, আজকের এই প্রতিষ্ঠা দিবসকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার কমরেড সদস্য জমায়েত হন। আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে আসরে নেমে পড়েছে বড় বড় সরকারি দলগুলি। অন্যদিকে বিস্মিত হয়ে দেখছি জীবন দায়ী ওষুধে ভেজাল, সাধারণ মানুষ যখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে, সেই সময় কেন্দ্রীয় সরকার ৭৪৮ টি অত্যাবশ্যকে ওষুধের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে।, অন্যদিকে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ চালু করে একদিকে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার কফিনের শেষ পেরেকটি মেরে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা ক্রমের মধ্যে নানা ধরনের অন্ধ কুসংস্কার ও মানবিকতাকে ছাত্র-ছাত্রীদের চিন্তায় নিয়ে আসার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বকেয়া আদায়ের নামে বিদ্যুতের মাশুলের রেকর্ড বৃদ্ধি হয়েছে এবং স্মার্ট মিটার চালু করে সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত টাকা লুটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কৃষকরা তাহাদের ফসলের ন্যায্য মূল্য বাড়ছে না অথচ চাষের খরচ ক্রমাগতই বেড়ে চলেছে, রেলসহ সমস্ত পরিসেবা ক্ষেত্রকে বেসরকারি মালিকদের হাতে জলের দরে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে, শ্রমকোড চালু করে শ্রমিকদের বহু সংগ্রাম লব্ধ অধিকার গুলোকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সমস্ত চা বাগান খোলা এবং শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ঘোষণায় প্রশ্নটি চূড়ান্তভাবে উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। অভয়ার ন্যায় বিচার আজও অধরায় , অভয়ার ন্যায় বিচারকে কেন্দ্র করে সিবিআই ও বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। মদের ব্যবসা চলছে রমরমিয়ে, নির্যাতিতা নারীর আর্তনাদ এবং বেকার যুবকের দীর্ঘশ্বাস আজ বাতাস ভারী করে তুলেছে সারাদেশে।
তাই শোষণের যাঁতাকলে পৃষ্ট জনগণের ঐক্যে ফাটল ধরাতে, শাসক শ্রেণীর দল ও শক্তি গুলি জাতপাত ও সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাষ্প ফেনিয়ে তুলেছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গাজায় নিশংস হত্যাকাণ্ড সহ সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ভয়াবহতার নতুন নজির সৃষ্টি করেছে। এই কথাগুলি অস্বীকার করার কোন উপায় নাই।
তাই আজকের সমাবেশ থেকে সাধারণ মানুষের মনে কিভাবে চেতনা গড়ে তোলা যায়, এই মঞ্চ থেকে সবাইকে শপথ নিতে হবে এবং পাড়ায় পাড়ায় গড়ে তুলতে হবে আন্দোলন। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মুখোশের আড়ালে বিভিন্ন দুর্নীতিকে মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। বোঝাতে হবে,
এদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের আপসহীন ধারার বিপ্লবী কমরেড শিবদাস ঘোষ মার্কসবাদ লেলিনবাদের শিক্ষার আলোকে স্বাধীনতা প্রাপ্তির আগেই বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছিলেন। আমরা তাহার নীতি অনুসরণ করে চলবো।